আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ তথ্যঃ
নামঃ আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ
জন্মসালঃ ৮ ফেব্রয়ারি, ১৯৩৪ খ্রিস্টাব্দ।
জন্মস্থানঃ বহেরচর – ক্ষুদ্রকাঠি গ্রাম, বাবুগঞ্জ, বরিশাল।
মৃত্যুসালঃ ১৯ মার্চ, ২০০১ খ্রিস্টাব্দ।
শিক্ষাজীবনঃ মাধ্যমিক – ময়মনসিংহ জিলা স্কুল। উচ্চমাধ্যমিক – ঢাকা কলেজ। উচ্চতর শিক্ষা – বি.এ (১৯৫৩), এম.এ (১৯৫৪), ইংরেজি বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
গবেষণাঃ “Later Poems of Yeats, the influence of Up- anishads” কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়।
ডিপ্লোমাঃ উন্নয়ন অর্থনীতি, কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়।
কর্মজীবনঃ অধ্যাপনা – ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
সচিব – বাংলাদেশ সচিবালয়।
মন্ত্রীঃ – কৃষি ও পানিসম্পদ মন্ত্রনালয় (১৯৮২)।
মহাপরিচালক – ঋঅঙ, এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চল।
চেয়ারম্যান – বাংলাদেশ সেন্টার ফর এডভান্সড স্টাডিজ।
সাহিত্য সাধনাঃ
প্রথম প্রকাশিত কাব্য গ্রন্থের নাম Ñ “সাতনরীরহার” (১৯৫৫)। অন্যান্য কাব্যগ্রন্থগুলো হলÑকখনো রং কখনো সুর (১৯৭০), কমলের চোখ (১৯৭৪), আমি কিংবদন্তীর কথা বলছি (১৯৯৩), বৃষ্টি ও সাহসী পুরুষের জন্য প্রার্থনা, আমার সময়, মহিষ্ণু প্রতীক্ষা, খাচার ভিতর অচিন পাখি, মসৃণ কৃষ্ণগোলাপ প্রভৃতি।
আবু জাফর ওবায়দুল্লাহর উল্লেখযোগ্য কবিতা হলো- “আমি কিংবদন্তীর কথা বলছি” ও “কোন এক মাকে।”
“আমি কিংবদন্তীর কথা বলছি” এই কাব্যগ্রন্থটি প্রকাশিত হয় ১৯৮১ সালে। এতে ৩৯টি কবিতা রয়েছে। বাঙালী জাতিসত্তার মৃত্তিকামূলে শিকড় সঞ্চার করে এ কাব্যগ্রন্থে কবি ঐক্যবদ্ধ চেতনায় সাহসী মানুষের সম্ভাবনার ছবি এঁকেছেন।
আবু জাফর ওবায়দুল্লাহর ভাষা আন্দোলন ভিত্তিক কবিতা “কোন এক মাকে”। পুরস্কার ও সম্মাননাঃ একুশে পদক বাংলা একাডেমী পুরস্কার (১৯৭৯)।
এক নজরে আমি কিংবদন্তির কথা বলছি
০১. প্রথম লাইন-আমি আমার পূর্বপুরুষের কথা বলছি।
০২. শেষ লাইন- আমরা কি তাঁর মতো স্বাধীনতার কথা বলতে পারবো।
০৩. কবিতাটি গদ্য ছন্দে রচিত।
০৪. যুদ্ধে আসে কীভাবে? -ভালবেসে।
০৫. ভালাবাসা দিলে কে মারা যায়? -মা।
০৬. কবি কার মৃত্যুর কথা বলেছেন? -গর্ভবতী বোনের।
০৭. কে প্রবহমান নদীর কথা বলতেন? -মা।
০৮. কর্ষিত জমির প্রতিটি শস্যদানা-কবিতা।
০৯. বাঙালি জাতির পূর্ব পুরুষরা ক্রীতদাস ছিলেন।
১০. “আমি কিংবদন্তির কথা বলছি” কবিতাটি কোন ছন্দে রচিত? – গদ্যছন্দে।
১১. জননীর আশির্বাদে কাকে দীর্ঘায়ু করবে? – যে গাভীর পরিচর্যা করে।
১২. পলিমাটিতে কি ছিল? -সৌরভ ছিল।
১৩. কার করতলে পলি মাটির সৌরভ ছিল? – কবির পূর্বপুরুষের।
১৪. পূর্ব পুরুষের কোথায় ক্ষত ছিল? – পিঠে ক্ষত ছিল।
১৫. ‘অতিক্রান্ত’ শব্দের অর্থ কি? – অতিক্রম করা হয়েছে এমন।
১৬. কবি কোন পাহাড়ের কথা বলতেন? – অতিক্রান্ত পাহাড়ের কথা।
১৭. কবি কোন জমি আবাদের কথা বলেছেন? – পতিত জমি।
১৮. প্রতিটি কেমন শব্দ কবিতা? – সত্য শব্দ।
১৯. কে ঝড়ের আর্তনাদ শুনবে? – যে কবিতা শুনতে জানে না।
২০. দিগন্তের অধিকার থেকে কে বঞ্চিত হবে? – যে কবিতা শুনতে জানে না।
২১. কে আজন্ম ক্রীতদাস থাকবে? – যে কবিতা শুনতে জানে না।
২২. কবিতায় উল্লিখিত জানালাটি কেমন? – উজ্জ্বল।
২৩. কবি কার কথা বলেছেন? – পূর্বপুরুষের কথা
২৪. পলিমাটির সৌরভ দ্বারা কী বোঝানো হয়েছে? – উর্বর মৃত্তিকা।
২৫. “বিচলিত স্নেহ” বলতে কবি ভালবাসা আর শঙ্কার মিশ্রিত অনুভূতিকে বুঝিয়েছেন।
২৬. “কিংবদন্তী” হলো লোকপরম্পরায় শ্র“ত ও কথিত বিষয় যা একটি জাতির ঐতিহ্যের পরিচয়বাহী।
২৭. কবিতায় হাজার বছরের বাঙালী সংস্কৃতি, এ জাতির সংগ্রাম, বিজয় ও মানবিক উদ্ভাসনের অনুষঙ্গ স্থান পেয়েছে।
২৮. “কর্ষিত জমির প্রতিটি শস্যদানা কবিতা” – এ কথার মাধ্যমে কবি ইন্দ্রিয়াতীতের দ্যোতনাকে সঞ্চারিত করতে চেয়েছেন।
গুরুত্বর্পূণ শব্দার্থ
শ্বাপদ – হিংস্র মাংসাশী শিকারি জন্তু।
বিচলিত স্নেহ – আপনজনের উৎকন্ঠা।
কিংবদন্তি – জনশ্র“তি। লোকপরম্পরায় শ্র“ত ও কথিত বিষয় যা একটি জাতির ঐতিহ্যের পরিচয়বাহী।
পিঠে রক্তজবার মতো ক্ষত – মানুষের ওপর অত্যাচারের ইতিহাস তুলে ধরা হয়েছে এখানে।
সূর্যকে হৃৎপিণ্ডে ধরে রাখা – সূর্য সকল শক্তির উৎস। তাই এই সর্বশক্তির আধারকে হৃদয়ে ধারণ করতে পারলে মুক্তি অনিবার্য।