বিড়াল: বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়

বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য:

  1. জন্ম: ১৮৩৮ খ্রিস্টাব্দ।
  2. মৃত্যু: ১৮৯৪ খ্রিস্টাব্দ।
  3. জন্মস্থান: পশ্চিমবঙ্গের চব্বিশ পরগণা জেলার কাঁঠাল পাড়ায়।
  4. পিতা: যাদব চন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। পেশায়- ডেপুটি কালেক্টর।
  5. ছদ্মনাম: কমলাকান্ত।
  6. উপাধি: সাহিত্য সম্রাট।
  7. পেশা: ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট।
  8. সম্পাদিত পত্রিকা: বঙ্গদর্শন। (১৮৭২)
  9. বাংলা সাহিত্যের প্রথম সার্থক উপন্যাস প্রণেতা। (দুর্গেশ নন্দিনী)
  10. বাংলা সাহিত্যের প্রথম রোমাঞ্চধর্মী উপন্যাস রচয়িতা;(কপাল কুন্ডলা)
  11. প্রথম রচিত উপন্যাস: রাজমোহনস্ ওয়াইফ (ইংরেজিতে লেখা)
  12. বঙ্কিম চন্দ্রের ত্রয়ী উপন্যাস হলঃ- আনন্দমঠ, দেবীচৌধুরাণী, সীতারাম।
  13. বঙ্গদেশের রাজনৈতিক পটভূমিকায় রচিত তাঁর উপন্যাস:- মৃণালিনী।
  14. সামাজিক সমস্যার প্রেক্ষাপটে রচিত উপন্যাস:- বিষবৃক্ষ, কৃষ্ণকান্তের উইল।
  15. প্রথম কাব্য গ্রন্থ:- ললিতা তথা মানস (১৮৫৬) সংবাদ প্রভাকর পত্রিকার মাধ্যমে সাহিত্য চর্চায় আত্মনিয়োগ করেন।
  16. বঙ্কিমচন্দ্র রচিত আনন্দমঠ ও রাজসিংহ উপন্যাসে হিন্দুর বাহুবল ও বীরত্ব রূপায়িত হয়েছে।

বঙ্কিমচন্দ্রের সাহিত্য কর্ম:

দুর্গেশনন্দিনী (১৮৬৫), কপাল কুন্ডলা (১৮৬৬), লোকরহস্য (১৮৭৪), বিজ্ঞান রহস্য (১৮৭৫),
মৃণালিনী (১৮৬৯), বিষবৃক্ষ (১৮৭৩), কমলাকান্তের দপ্তর (১৮৭৫), বিবিধ সমালোচনা (১৮৭৬),
কৃষ্ণকান্তের উইল (১৮৭৮), রজনী (১৮৭৭), সাম্য (১৮৮৬), কৃষ্ণ চরিত্র (১৮৮৬),
রাজসিংহ (১৮৮২), আনন্দমঠ (১৮৮২), বিবিধ প্রবন্ধ (১৮৯২), ধর্মতত্ত্ব অনুশীলন (১৮৮৮),
দেবী চৌধুরাণী (১৮৮৪), সীতারাম (১৮৮৭), শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা (১৯০২)

পাঠ পরিচিতি:

রসাত্মক ও ব্যঙ্গধর্মী রচনার সংকলন ‘কমলাকান্তের দপ্তর’। তিন অংশে বিভক্ত এই গ্রন্থটিতে যে কটি প্রবন্ধ আছে, তার মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য রচনা ‘বিড়াল’। একদিন কমলাকান্ত নেশায় বুঁদ হয়ে ওয়াটার-লু যুদ্ধ নিয়ে ভাবছিলেন। এমন সময় বিড়াল এসে কমলাকান্তের জন্য রাখা দুধটুকু খেয়ে ফেলে। ঘটনাটা বোঝার পর তিনি লাঠি দিয়ে বিড়ালটিকে মারতে উদ্যত হন। তখন কমলাকান্ত ও বিড়ালটির মধ্যে কাল্পনিক কথোপকথন চলতে থাকে। এর প্রথম অংশ নিখাদ হাস্যরসাত্মক, পরের অংশ গূঢ়ার্থে সন্নিহিত।

তথ্যকণিকা:-
০১. “কেহ মরে বিল ছেঁচে, কেহ খায় কই”। উক্তিটি হলো মার্জার (বিড়ালের)।
০২. পরোপকারই পরম ধর্ম। উক্তিটি হলো বিড়াল গল্পের।
০৩. অধর্ম চোরের নহে চোরে যে চুরি করে, সে অধর্ম কৃপণ ধনীর। উক্তিটি করে বিড়াল।
০৪. কমলাকান্তের দপ্তর প্রকাশিত হয় ১৮৭৫ সালে।
০৫. ‘কমলাকান্তের দপ্তর’ গ্রন্থটি  তিন অংশে বিভক্ত ।
০৬. ‘বিড়াল’ রচনাটি সংকলিত হয়েছে কমলাকান্তের দপ্তর’ থেকে।
০৭. ‘কমলাকান্তের দপ্তর’ রসাত্মক ও ব্যঙ্গধর্মী রচনার সংকলন।
০৮. ‘বিড়াল’ রচনাটি একটি রসাত্মক ও ব্যঙ্গধর্মী প্রবন্ধ ।
০৯. ‘বিড়াল’ রচনা কমলাকান্ত ও বিড়ালের কাল্পনিক কথোপকথন ।
১০. রচনাটির প্রথম অংশ নিখাদ হাস্যরসাত্মক ।
১১. রচনাটির দ্বিতীয় অংশ গূঢ়ার্থে সন্নিহিত ।
১২. ‘বিড়াল’ রচনায় রয়েছে দুটি চরিত্র মার্জার (বিড়াল) ও কমলাকান্ত ।
১৩. বিড়াল রচনার মূল প্রতিপাদ্য বিষয় দরিদ্রের বৈষম্য দূর করা।
১৪. বিড়াল খেয়ে ফেলেছে কমলাকান্তের জন্য রাখা দুধ।
১৫. দুধের উপর কমলাকান্তের মতোই সমান অধিকার  বিড়ালের।

১৬. কমলাকান্ত বিড়ালকে তাড়া করেছিলেন  ভাঙা লাঠি নিয়ে।
১৭. কমলাকান্তের তাড়া খেয়ে বিড়াল  হাই তুলে সরে বসল।
১৮. মানুষ ও বিড়ালে প্রভেদ নেই  ক্ষুৎপিপাসার দিক থেকে।
১৯. দুধ ছিল  মঙ্গলার ।
২০. বিড়ালের চামড়ার রং ছিল কালো।
২১. দুধ দুহিয়াছে  প্রসন্ন।
২২. কমলাকান্ত চারপায়ীর উপর বসে ঝিমাচ্ছিল ।
২৩. কমলাকান্ত নিমীলিতলোচনে ভাবছিল ওয়াটার লু যুদ্ধের কথা ।
২৪. কমলাকান্ত ওয়েলিংটন ভেবেছে একটি ক্ষুদ্র মার্জারকে ।
২৫. কমলাকান্তের জন্য দুধ রেখে গিয়েছিল প্রসন্ন।
২৬. কমলাকান্তের জন্য রাখা দুধ খেয়ে নিঃশেষ করেছে বিড়াল।
২৭. বিড়ালের মতে Ñপরোপকারই পরম ধর্ম ।
২৮. বিড়ালের মতে, চোরে যে চুরি করে সে অধর্ম  কৃপণ ধনীর।
২৯. বিড়ালের মতে, সমাজের ধনবৃদ্ধির অর্থ ধনীর ধনবৃদ্ধি ।
৩০. নেপোলিয়ন বোনাপার্ট ছিলেন ফরাসি সম্রাট ।

৩১. ওয়াটার লু যুদ্ধে নেপোলিয়নকে পরাজিত করেন ওয়েলিংটন।
৩২. ‘দিব্যকর্ণ’ শব্দের অর্থ ঐশ্বরিকভাবে শ্রবণ ।
৩৩. ‘কস্মিনকালে’ শব্দের অর্থ কোনো সময়ে।
৩৪.‘বিড়াল’ রচনায় বিড়াল ‘সোশিয়ালিস্টিক’, সুবিচারিক’, ‘সুতার্কিক’।
৩৫. কার ক্ষুধা কেউ বোঝে না? দরিদ্রের ক্ষুধা ।
৩৬. বিড়ালের দৃষ্টিতে কমলাকান্ত দূরদর্শী প্রকৃতির ।
৩৭. বিড়াল কমলাকান্তকে প্রহার না করে কী করতে বলে প্রশংসা করতে বলে।
৩৮. ‘বিড়াল’ রচনায় কাকে সুবিচারক বলা হয়েছে? বিড়ালকে ।
৩৯. ক্ষুদ্র আলো মিট মিট করে জ্বলছিল।
৪০. ‘বিড়াল’ রচনায় কাকে সুতার্কিক বলা হয়েছে? বিড়ালকে ।
৪১. মার্জারের প্রশ্ন বুঝতে পেরে কমলাকান্ত কী ত্যাগ করলেন? যষ্টি ত্যাগ করলেন ।
৪২. ‘তোমাদের ক্ষুৎপিপাসা আছে আমাদের কি নাই? প্রশ্নটি কার বিড়ালের ।
৪৩. ‘বিড়াল’ রচনায় ‘পতিত আত্মা’ বলা হয়েছে যাকে বিড়ালকে ।
৪৪. কমলাকান্তের প্রতি মার্জারীর প্রথম উপদেশ হল পরোপকারই ধর্ম।
৪৫. বিড়ালের কথা ছিল সমাজতান্ত্রিক।
৪৬. রচনায় মেও শব্দটি -১৩ বার ব্যবহৃত হয়েছে।
৪৭. তেলা মাথায় তেল দেওয়া অর্থ – তোষামোদ করা।
৪৮. বিড়াল কমলাকান্তের ধর্মের সহায়।
৪৯. আমি যদি নেপোলিয়ন হইতাম, তবে ওয়াটার্লু জিতিতে পারিতাম কিনা। উক্তিটি হলো কমলাকান্তের।
৫০. “সামাজিক ধনবৃদ্ধি ব্যতীত সমাজের উন্নতি নাই”, উক্তিটি করেন কমলাকান্ত, বিড়ালকে উদ্দেশ্য করে ।

৫১. “আমি যদি খাইতে না পাইলাম, তবে সমাজের উন্নতি লইয়া কী করিব?” উক্তিটি করে বিড়াল, কমলাকান্তকে উদ্দেশ্য করে।
৫২. বিজ্ঞ চতুষ্পদের কাছে শিক্ষালাভ ব্যতীত তোমাদের জ্ঞানোন্নতির উপায়ান্তর দেখি না। উক্তিটি করে বিড়াল, কমলাকান্তকে উদ্দেশ্য করে।
৫৩. তেলা মাথায় তেল দেওয়া মনুষ্যজাতির রোগ উক্তিটি বিড়াল গল্পের, বিড়াল নিজে উক্তিটি করে।
৫৪. ‘তোমার দুধ ও খাইয়া বসিয়া আছি এখন বল কী?” উক্তিটি বিড়াল কমলাকান্তকে উদ্দেশ্য করে বলেন।
৫৫. কমলাকান্ত বিড়ালকে কাদের গ্রন্থ দিতে চাইলেন? নিউমান ও পার্করের গ্রন্থ দিতে চাইলেন ।
৫৬. কমলাকান্ত বিড়ালকে কতটুকু আফিং দেওয়ার প্রতিশ্র“তি দিলেন? সরিষাভোর আফিং দেওয়ার প্রতিশ্র“তি দিলেন।
৫৭. ‘কমলাকান্তের দপ্তর পড়লে বিড়াল কী বুঝতে পারবে? আফিং এর অসীম মহিমা বুঝতে পারবে ।
৫৮. বিড়ালের প্রতি পুরুষের ন্যায় আচরণ করা বিধেয় এর দ্বারা বুঝানো হয়েছে প্রথাগত আচরণ।
৫৯. কেহ মরে বিল ছেঁচে, কেহ খায় কই এই প্রবাদের মমার্থ হলো নিজের পরিশ্রমের ফল অপরে বিনা পরিশ্রমে আত্মসাৎ করে।

নিজের সুবিধামত পড়ার জন্য টাইমলাইনে শেয়ার করে রাখুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

nine + 15 =